|
http://edutechinfobd.blogspot.com |
সার্ভার ক্লায়েন্ট ডোমেন হোস্টিং এই সব নাম বা শব্দগুলো এক সময় বেশ দুর্বোধ্য ও কঠিন মনে হতো। কিন্তু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এই যুগে হরহামেশাই উল্লেখিত শব্দগুলো শোনা যায় কিংবা আমরা বলে থাকে। যদিও এখনো অনেকেরই এগুলো সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নেই। একেক জন একেক রকম করে নিজের বোঝার সুবিধার্থে বিষয়গুলো আত্মস্থ করে থাকে। যেহেতু এই প্রযুক্তিগুলো আমাদের দেশের নয় তাই বিষয়গুলোর সাথে পরিচিত হতে আমাদের একটু বেশি সময় লেগেছে। অন্যদিকে, স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়টি বাধ্যতামূলক করায় এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে আইটি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও আগ্রহের বিষয় হওয়ায় আইটির খুঁটিনাটি দিকসমূহ জানার আগ্রহও বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে একেবারে সবার বোঝার সুবিধার্থে খুব সহজে যদি সার্ভার ক্লায়েন্ট ডোমেন এবং হোস্টিং সম্পর্কে বলি তবে উপরের চিত্রটিই হতে পারে উত্তম পন্থা। ধাপে ধাপে উপরের চিত্রানুযায়ী আমরা নিচে ওগুলো সম্পর্কে জানবো।
ইংরেজি Server শব্দের অর্থ হলো সেবা দানকারী। আর Server শব্দটি এসেছে Serve (সার্ভ) থেকে যার অর্থ হলো সেবা। উপরের চিত্রে পানির ট্যাঙ্কটিকে আমরা সার্ভারের সাথে তুলনা করতে পারি যেখানে রয়েছে পানি। পানিকে আবার আমরা ডেটা বা তথ্যের সাথে তুলনা করতে পারি। আর আইটির ভাষায় সার্ভার হলো একটি শক্তিশালী কম্পিউটার যেখানে থেকে বিভিন্ন সেবা পেয়ে থাকি। যেমন, ই-মেইল সার্ভার, ওয়ব সার্ভার ইত্যাদি। অন্যদিকে, পানি আছে বলে ট্যাঙ্কটি থেকে পানি আসবে সংযুক্ত বিভিন্ন কলে। কিন্তু যদি ট্যাঙ্কটিতে তেল থাকতো তবে বিভিন্ন সংযুক্ত কল দিয়ে তেলই আসবো। ঠিক একই ভাবে, ই-মেইল সার্ভার ক্লায়েন্টকে ই-মেইল সেবা এবং ওয়েব সার্ভার ক্লায়েন্টকে ওয়েবসাইটের সেবা দান করে থাকে। আর এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে যেটি ক্লায়েন্টের রিকোয়েস্টকে সার্ভ করে। হয়ত এখন জানতে ইচ্ছে করছে তাহলে ক্লায়েন্ট কী?
|
http://edutechinfobd.blogspot.com |
Client অর্থ হলো সেবা গ্রহীতা। অর্থাৎ সার্ভার থেকে যে সব কম্পিউটার বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করে থাকে তাদের প্রত্যেকটিকে ক্লায়েন্ট বলা হয়ে থাকে। এবং ক্লায়েন্ট তার সমস্ত সেবা ব্রাউজারের মাধ্যমে কম্পিউটারের মনিটরে পেয়ে থাকে বা প্রদর্শিত হয়। উপরের প্রথম চিত্রানুযায়ী বেসিনের কল, বাথ টাবের কল এবং ঝর্ণা হলো ক্লায়েন্ট কেননা এগুলোর সাথে সংযুক্ত চাবিটি ঘুরালে ট্যাঙ্ক থেকে প্রেরিত পানি পড়ে। এক্ষেত্রে সার্ভারে রক্ষিত ডেটা বা তথ্যসমূহ যেমন ক্লায়েন্ট কম্পিউটারে মনিটরে প্রদর্শিত হয় ঠিক তেমনি। আরেক ভাবে বলা যায়, এই মুহূর্তে আপনি যে লেখাটি পড়ছেন সেটি গুগলের সার্ভার থেকে প্রেরিত হচ্ছে আপনার ক্লায়েন্ট (মোবাইল, পিসি, ট্যাব, ল্যাপটপ)-এর রিকোয়েস্টের প্রত্যুত্তরের সেবা হিসেবে।
Domain অর্থ এক কথায় ‘নাম’। ক্লায়েন্ট যখন কোন কিছু ইন্টারনেটে সার্চ করে বা খোঁজে তখন সে সার্চ রেজাল্ট স্বরূপ বিভিন্ন লিংক পেয়ে থাকে। লিংকগুলো বিভিন্ন ওয়েবসাইটের হয়ে থাকে। কিন্তু আইটির ভাষায় এগুলো এক একটি আইপি অ্যাড্রেস। IP (Internet Protocol) গুলো সার্ভার সফটওয়্যার বুঝতে সক্ষম হলে মানুষ তা বোঝে না। এর চেয়েও বড় সমস্যা হলো সেগুলো মনে রাখা। যেমন আমরা কজনেই বা কয়টা মোবাইল নাম্বার মনে রাখতে পারি ঠিক একই ভাবে আইপিগুলো মনে রাখা সম্ভব নয়। তখন এই আইপিগুলো যেন মানুষ মনে রাখতে পারে তার জন্য প্যাকেটের ব্যবস্থা করা হলো। আর সেই প্যাকেটটিকে মানে নামের মোড়কের ভিতর আইপি অ্যাড্রেস ঢুকিয়ে দেওয়াকেই বলে ডোমেন। আরো সহজ করে বললে-বিভিন্ন রকমের মিষ্টির নাম আমাদের মনে না থাকলেও প্যাকেট দেখে কিন্তু আমরা বলে দিতে পারি যে, এটা মিষ্টির প্যাকেট। আর প্যাকেটের ভেতর থাকে মিষ্টি। দোকানিকে বলতে হয় না যে, আমাকে অমুক মিষ্টির প্যাকেট দিন। ফলে আমাদের বিভিন্ন মিষ্টির নাম জানতে হয় না। আবার মিষ্টির নামগুলো জানে বিক্রেতা। আর এই বিক্রেতা হলো সার্ভার সফটওয়্যার যেটি সব আইপিগুলোকে চিহ্নিত করতে পারে। অর্থাৎ মানুষের মনে রাখার সুবিধার্থে IP বা আইপিতে ব্যবহৃত নাম্বার বা সংখ্যা (যেমন-192.168.1.101) গুলোকে একটি নামের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়াকেই ডোমেন বলে। যদি ব্যবহারকারী আইপি অ্যাড্রেস মনে রাখতে বলা হতো তাহলে হয়ত ফেসবুকের আইপিটা মনে রাখাই কষ্ট হয়ে যেতো। কিন্তু ডোমেন সিস্টেম চালু হওয়াতে আমাদেরকে ফেসবুকের URL (Uniform Resource Locator)-টি মনে রাখলেই হচ্ছে। যেটি হচেছ facebook.com, যা একটি ডোমেনের নাম।
উপরের ডোমেন থেকে বোঝা যাচ্ছে আমরা যখন ব্রাউজারে ডোমেনের নাম (যেমন- ফেসুবক, ইউটিউব, ব্লগার) দিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি তখন আমাদের সামনে মনিটর বা ডিসপ্লেতে বিভিন্ন তথ্যাদি ছবি ভিডিও প্রদর্শিত হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো এগুলো আসে কোথা থেকে? ঐ ডোমেনের ভেতরেই কি সব থাকে? উত্তর হলো ‘না’। এটির সহজ উত্তর আপনি পাবেন উপরের প্রথম চিত্রে। ট্যাঙ্কে কল লাগিয়ে দিলেই কি আমরা পানি পাবো যদি ট্যাঙ্কে পানিই না থাকে? ঠিক তাই আগে আমরা ট্যাঙ্কে পানি ভরি তারপর কল ছাড়া হলে ট্যাঙ্কের পানি আমাদের সংযুক্ত কল দিয়ে বের হয়ে আসে। একইভাবে ডোমেনের মাধ্যমে আমরা যে তথ্যাদি ও চিত্র ব্রাউজারের (যেমন-মজিলা ফায়ারফক্স, গুগল ক্রোম, ওপেরা, সাফারি, ইউসিবি ইত্যাদি ব্রাউজার) সাহায্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখি তা আগে থেকেই কোন একটা সার্ভারের নির্দিষ্ট অংশে আপলোড করা হয়। পরবর্তীতে ক্লায়েন্ট সেই সব সেবা গ্রহণ করে থাকে। আর আপলোড করার জায়গাকেই হোস্টিং বলা হয়ে থাকে।
0 comments:
__আপনার মতামত নিচে লিখুন। ধন্যবাদ।__