Thursday, January 28, 2021

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন উদ্বোধনে অংশগ্রহণকারীরা ইতিহাসেরও অংশ

 ২৭ জানুয়ারি, ২০২১। বাংলাদেশের ইতিহাসে দিনটি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এদিন covid-19 মহামারীর ভ্যাকসিন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহরে সর্বপ্রথম করোনা ভাইরাসটি ধরা পড়ে। এরপর এক বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হলে বিশ্বব্যাপী তুমুল গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয় এই ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করার লক্ষ্যে। অবশেষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সমর্থ হয়। বাংলাদেশেও চলে এর প্রতিষেধক তৈরি গবেষণা। ইতিমধ্যে কীট তৈরিতে সফল হয় বাংলাদেশ। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য অনেক দূর এগিয়েছে গবেষণা কার্য। বাংলাদেশে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক আমদানি করা হয় ভারত থেকে। ভারতে ইতিমধ্যেই এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা শুরু হয়ে গেছে এবং এর সুফল পাওয়া গেছে। ভ্যাকসিন প্রয়োগ পরীক্ষিত এবং নিরাপদ। তবে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যে দেখা দেয়নি সেটা বলা যাবে না। ভারতে বেশ কয়েক শ রোগীর মধ্যে প্রতিষেধক প্রয়োগের পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। যাই হোক, তবে আশার বাণী হচ্ছে ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়েছে এবং সেটি প্রয়োগ করা শুরু হয়েছে বিশ্ববাসী এর সুফল পাচ্ছে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া যেটি একেবারেই আমলে নেয়ার মতো নয়। একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কারে যে পরিমাণ সময় দরকার পৃথিবীতে ভ্যাকসিন আবিষ্কার এর ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার তার মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। যদিও এটি নিয়ে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে যাতে করে কোনো প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সন্দেহ ছাড়াই রোগীর দেহে প্রতিষেধক প্রয়োগ করা যায়।


বাংলাদেশ গত ২০ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে ভারত থেকে প্রথম চালান এর প্রতিষেধক চলে আসে। এবং এরপরই ২৭ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অর্থাৎ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রতিষেধক প্রয়োগের শুভ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয় ঢাকাস্থ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। এবং প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদেরকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করেন এবং তাদেরকে উৎসাহ দেয় এবং তাদের জন্য প্রার্থনা করেন। ভ্যাকসিন গ্রহণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে যারা বাংলাদেশের জন্য নতুন ইতিহাস রচনা করেন তারা হলেন-

edutechinfobd.blogspot.com

১)   রুনু ভেরণিকা কস্তা- সিনিয়র স্টাফ নার্স, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল
২)  ডাক্তার আহমেদ লুৎফুল মোবেন- চিকিৎসক, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল
৩)  অধ্যাপক ডাক্তার নাসিমা সুলতানা- অতিরিক্ত মহাপরিচালক, প্রশাসন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
৪)  মোঃ দিদারুল ইসলাম- ট্রাফিক পুলিশ, মতিঝিল বিভাগ
৫) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

এছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর টিকাদান কেন্দ্রে করোনার টিকা নিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি মন্ত্রিপরিষদ ও দেশের রাজনীতিবিদদের মধ্যে প্রথম সদস্য হিসেবে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন।
দেশে বর্তমানে (২৭ জানু, ২০২১ এর তথ্য অনুযায়ী) ৭০ লক্ষ ডোজ  ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার তিন কোটি ৪০ লক্ষ মানুষের জন্য মোট ৬ কোটি ৮০ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন আমদানি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এতে করে দেশে করোনায় আক্রান্ত রোগের ভ্যাকসিনের কোন প্রকার ঘাটতি দেখা দেবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। উল্লেখ্য, প্রতি ব্যক্তির জন্য ২টি করে ডোজ/টিকা প্রযোজ্য।
 বিগত এক বছরের অধিক সময় ধরে বিশ্বব্যাপী মানুষ মহামারীর কারণে ভয়ংকর অবস্থার মধ্যে পড়েছে। নজিরবিহীন এ মহামারীর কারণে পৃথিবীব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্য শিক্ষা অফিস-আদালত সর্বক্ষেত্রেই বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। তাই সকলেই নতুন বছরের শুরুতেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন ভ্যাকসিনের জন্য। অবশেষে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে তা প্রয়োগ করা শুরু হয়েছে। সকলেই ভবিষ্যতে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে।

0 comments:

__আপনার মতামত নিচে লিখুন। ধন্যবাদ।__