বিশ্বব্যাপী রয়েছে নামকরা সব তারকা ব্যক্তিত্ব। কর্মগুণে তাঁরা পৌঁছে গেছে
সফলতার স্বর্ণ শিখরে। কিন্তু তাঁদের অনেকেই পারেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি
পেড়ুতে। প্রকৃতপক্ষে, বিদ্যা শিক্ষার সাথে অর্থ আয় এবং সফলতা বা খ্যাতির
কোন সম্পর্ক নেই। খ্যাতি ও সফলতার সাথে সম্পর্ক হলো ব্যক্তির কর্মগুণ ও
কর্ম দক্ষতা। পক্ষান্তরে, শিক্ষা মানুষকে আলোকিত করে। তাঁর ভেতরকার
অন্ধকার এবং মনের সংকীর্ণতাকে দূর করে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই এই ধরণের
প্রচলিত ভুল ধারণা রয়েছে যে, শিক্ষাগ্রহণ করছে অর্থ আয়ের জন্য।
প্রকারন্তরে, এখানে শিক্ষাকে ছোট করা হয়। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো
ব্যক্তির আচরণের অপেক্ষাকৃত স্থায়ী ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়ণ করা। কিন্তু আমরা
এটিকে অর্থ আয়ের কিংবা উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ধরে নিয়েছি। নিচে আজকের
এই আধুনিক বিশ্ব যাদের হাত ধরে এ পর্যন্ত এসেছে তাঁদের কয়েকজনের শিক্ষা
জীবন তুলে ধরা হলো, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্পন্ন করতে পারেননি।
কিন্তু বিশ্বকে দিয়ে গেছে আধুনিক সব অভাবনীয় প্রযুক্তি। চলুন অতি সংক্ষেপে
জেনে নেই তাঁদের শিক্ষা জীবন সম্পর্কে। সাথে রয়েছে খ্যাতিমান সব তারকারাও।
হলিউড বলিউডে যাদের রয়েছে বিস্তর প্রভাব এবং জনপ্রিয়তায় যারা তুমুল তুঙ্গে।
সালমান খান
মুম্বাইয়ের বান্ড্রায় স্কুলের লেখাপড়া শেষ করে কলেজে উঠে ড্রপ আউট হয়ে যায় এই খ্যাতিমান বলিউড তারকা।
আমির খান
দ্বাদশ শ্রেণির পর আমির খান তারঁ লেখাপড়া বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অভিনয়ে ক্যারিয়ার গড়ার প্রতি অধিক মনোযোগী হন।
অক্ষয় কুমার
এই বলিউড অভিনেতা কলেজে ভর্তি হয় ঠিকই, কিন্তু পরে মার্শাল আর্টের দিকে অধিক আগ্রহের কারণে কলেজের লেখাপড়া থেকে ড্রপ আউট হয়ে যায়।
সোনাম কাপুর
বলিউডের
ফ্যাসিনেটিং হাসির জন্য বিখ্যাত এই নায়িকাও তার গ্রাজুয়েশন শেষ করতে
পারেননি। তবে ৩২ বছর বয়সী এই নায়িকা আশা ব্যক্ত করেছেন, যে কোন সময় সে তাঁর
অসমাপ্ত গ্রাজুয়েশণ সম্পন্ন করবেন।
দিপিকা পাডুকন
ব্যাঙ্গালরের
সোফিয়া হাই স্কুলের পাঠ চুকিয়ে গান্ধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটিতে
সোসোলজিতে ভর্তি হন বলিউডের এই সুন্দরী। কিন্তু ক্যারিয়ারের কারণে
গ্রাজুয়েশন শেষ করতে ব্যর্থ হন।
কারিশমা কাপুর
মাত্র
১৬ বছর বয়সে “প্রেম কয়েদি” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বলিউডের ক্যারিয়ারের শুরু
হওয়া এই তারকা ক্যারিয়ারের প্রতি অধিক মনোযোগী হওয়ায় তাঁর গ্রাজুয়েশন শেষ
করতে পারিননি।
ঐশ্বরিয়া রায়
এইচএসসিতে
৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করে আর্কিটেক্ট হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মডেলিং
ক্যারিয়ারকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত আর গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি সম্পন্ন
করতে পারেননি।
প্রিয়াংকা চোপরা
২০০০
সালে ১৭ বছর বয়সে মিস ওয়ার্ল্ড হওয়ার পর অগণিত মুভির অফারে ভেসে যায়
প্রিয়াংকা। ফলে আর লেখাপড়া চালিয়া যাওয়া সম্ভব হয়নি এই তারকা অভিনেত্রীর
পক্ষে।
আলিয়া ভাট
২০১১ সালে স্কুলের পাঠ শেষ করে অভিনয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় এখনো তাঁর গ্রাজুয়েশন শেষ করতে পারেননি।
ক্যাটরিনা কাইফ
মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকে মডেলিংয়ে জড়িয়ে যাওয়ার স্কুলের পর আর কলেজে যাওয়া হয়নি।
কাঙ্গনা রনৌত
মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল কিন্তু পরীক্ষায় বসা হয়নি। পরবর্তীতে দিল্লিতে মডেলিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য চলে আসে।
আর্জুন কাপুর
বনি
কাপুর ও শ্রী দেবির পুত্র আর্জুন কাপুর। দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায়
একটি বিষয়ে ফেল করায় আর পড়ায় ফেরা হয়নি এই অভিনেতার। পরে শিক্ষা পর্ব শেষ
করে অভিনয়ে মনোযোগী হন।
কাজল
এই
সুপারস্টার মাত্র ১৬ বছর বয়সে সিনেমায় প্রবেশের সুযোগ পায় “বেখুদি”
চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। পরে কলেজে আবার ভর্তি হয়ে শিক্ষার গ্রহণে আগ্রহী হলেও
শেষ পর্যন্ত আর তা হয়ে উঠেনি।
কারিনা কাপুর খান
আইনজীবী
হওয়ার ইচ্ছা ছিল এই তারকার কিন্তু ঠিক তখনই “রিফিউজি” সিনেমার অফার পান।
ফলে, দ্বিতীয় কোন চিন্তা না করেই অভিনয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন। শেষ হয়
লেখাপড়ার পর্ব।
অভিষেক বচ্চন
স্কুল
কলেজের পাঠ শেষ করে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন অভিষেক। কিন্তু
অবিশ্বাস্য হলেও, সে সময় বিভিন্ন কারণে বচ্চন পরিবারকে আর্থিক অনটন ঘিরে
ধরে। ফলে, শেষ করা হয়নি এই অভিনেতার গ্রাজুয়েশন।
মার্ক জুকারবার্গ
বিশ্বের
সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান
বিশ্বের সেরা দশজন ধনীর মধ্যে একজন হলেন এই টেক জিনিয়াস। কিন্তু হার্ভার্ড
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৪ সালে ড্রপ আউট হয়ে যান গ্রাজুয়েশন শেষ না করেই।
স্টিভ জবস
১৯৭২
সালে পোর্টল্যান্ডের রিড কলেজে ভর্তির পর সেখানে ছয় মাসের মতো ছিলেন। এরপর
প্রযুক্তির নেশায় একের পর এক কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছন অ্যাপলের মতো জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান।
কিন্তু শেয় করা হয়নি গ্রাজুয়েশন।
ল্যারি এলিসন
২১
বছর বয়সে কলেজের পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে স্বাধীন চেতা এই গড ফাদার অভ টেকনোলজি
গড়ে তুলে ওরাকল। পড়াশুনার প্রতি স্কুল জীবন থেকেই অনীহা ছিল ল্যারির ফলে
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি আর নেয়া হয়নি। তিনি বর্তমানে (২০১৯) বিশ্বের সপ্তম
ধনী।
মাইকেল ডেল
আমেরিকার
টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে নাম লিখিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ লাভ করতে
পারেননি। প্রতিষ্ঠা করেন কম্পিউটার জগতে বিখ্যাত ব্র্যান্ড ডেল কম্পিউটার
কোম্পানি।
ইভান উইলিয়ামস
বর্তমান
সময়ের বহুল জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং
গুগলের বগ্লার প্লাটফর্ম-এর প্রতিষঠাতা ইভান ইউনিভার্সিটি অভ নেব্রাসকাতে
১৯৯০ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করলেও তা আর সম্পন্ন
করা হয়নি। ছেড়ে দেন পড়াশুনা।
0 comments:
__আপনার মতামত নিচে লিখুন। ধন্যবাদ।__