Thursday, October 4, 2018

Quota System BD- কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি


কোটা বাতিল প্রজ্ঞাপন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
অবশেষে মন্ত্রীপরিষদের অনুমোদনের পর আজ ০৪ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখ বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করলো। দীর্ঘ কয়েক মাস আন্দোলনের ফলে সরকার কোটা আন্দোলনকারীদের বিষয়টিকে গুরুত্বে এনে এই সিদ্ধান্ত নেয়।  জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই পরিপত্রটি জারি করে। 
এর আগে ২ জুলাই, ২০১৮ তারিখে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করা হয় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সিনিয়র সচিব-সংসদ বিষয়ক বিভাগ, সচিব-অর্থ বিভাগ, সচিব-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সচিব-জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, সচিব-বাংলাদেশ কর্ম কমিশন সচিবালয় এবং ভারপ্রাপ্ত সচিব-প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। 
পক্ষে বিপক্ষে কথা থাকলেও সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলকে স্বাগত জানিয়েছেন। কেননা, কোটা একটি জলিট প্রকিয়া এবং চাকুরির ক্ষেত্রে কোটার বিভিন্ন ধাপ অনুসরণ করে নিয়োগ প্রক্রিযা সম্পন্ন করা একটা ঝামেলাপূর্ণ ব্যবস্থাই বটে। তাছাড়া এতে করে সৃষ্ট জটিলতার ভোগান্তি প্রার্থীকেই পরবর্তীতে পোহাতে হয়। তাছাড়া রাষ্ট্রের মঙ্গলের জন্য কোটা পদ্ধতি আদৌ কতটা সহায়ক সে  প্রশ্ন থেকেই যায়। পক্ষান্তরে, মেধাবীরা দিনকে দিন পিছিয়ে যায় এবং সমাজের মেধাবীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন গোষ্ঠীর জন্য চাকুরি কোটার ব্যবস্থা রাখার চেয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের জন্য অর্থনৈতিক মুক্তি বিভিন্ন পন্থা বের করা যেতে পারে। কেননা,  একজন মেধাবী যদি কোটার কাছে হেরে যায় তবে সে হার হবে আমাদের সবার- রাষ্ট্রের এবং সমাজের। একজন মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরিতে অনেক পথ, সময় এবং অর্থ খরচ করতে হয়। সে অর্থে মেধাবীরা রাষ্ট্রের সম্পদ। 
অন্যদিকে, পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার জন্য কোটা ভিত্তিক যে পদ্ধতি আমরা অনুসরণ করছি তাতে করে হয়তো ঐসব পরিবারের অর্থ উপার্জনের একটা উপায় মিলে কিন্তু অর্থনৈতিক মুক্তি মিলে কতটা সেটিও ভাববার বিষয়। ফলে, প্রচলিত অবস্থায় তরুণদের মধ্যে যে উৎকণ্ঠা ও অস্থিরতা বিরাজ করে একজন চাকরীপ্রার্থী হিসেবে সেটিও ভাববার প্রয়োজন রয়েছে রাষ্ট্রের। কেননা, গুটি কয়েকের জন্য পুরো সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা অস্থির করার সুযোগ আজকের সভ্য সমাজে প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। আর প্রয়োজন যে নেই, সেটি বুঝিয়ে দিয়েছে এদেশের তরুণরাই কোটা নামক বিষ ফোঁড়া উপ্রে ফেলার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। দেশ সবার, দেশের সম্পদ এবং সুযোগ-সুবিধা সবার এবং সেটি সমান হওয়াও বাঞ্ছনীয়। এটি বৈষম্য দূরীকরণেও কাজ করবে। অন্যদিক, কোটা নয় বরং সবার চাওয়া হতে পারে শিক্ষাগ্রহণের সমান সুযোগ এবং শিক্ষাখাতের ভর্তুকি বাড়িয়ে হলেও সবাইকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা। তখন আর কোটা নিয়ে কেউ আসবে না। জ্ঞানের আলোয় আলোকিত চাকুরি প্রার্থীরা তখন নিজেদের প্রমাণ করবে শিক্ষা ও জ্ঞানের লড়াইয়ের মাধ্যমেই। আমাদের তরুণরা হয়ে উঠুক বিশ্ব প্রতিযোগিতার যোগ্য প্রার্থী হয়ে, কোন কোটার করুণায় কেবল টিকে থাকার জন্য তাদের জীবন নয়। 


0 comments:

__আপনার মতামত নিচে লিখুন। ধন্যবাদ।__