Monday, February 25, 2019

ওয়েবসাইটের গুরুত্ব ও আয়ের উৎস

একটা সময় ওয়েবসাইট বলতে আমাদের ধারণা ছিল যে, ওয়েবসাইট মানেই হলো অফিস আদালত বা কোন কোম্পানির একটি অংশ। কিন্তু সময়ের আবর্তে সেই ধারণা আজ পাল্টে গেছে। প্রতিটি মানুষই এখন একটি কোম্পানি, প্রতিটি মানুষই আজকে এক একটি ওয়েবসাইট। কেননা আজকের বিশ্বের সম্পদ হলো জ্ঞান। সেই জ্ঞানের আধার হলো মানুষ তথা আমি আপনি আমরা সবাই। আর এই জ্ঞান সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেই ব্যবহৃত হয় ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইট বা ব্লগসাইটগুলো বিশাল ভূমিকা পালন করছে জ্ঞানকে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিয়ে যেতে। পক্ষান্তরে, বর্তমান বিশ্ব তথ্য ও প্রযুক্তি নির্ভর। আর সেই নির্ভরতায় গা ভাসিয়েছি সবাই। বাস্তবিক জীবনে একজন ব্যক্তির অস্তিত্ব এখন নির্ভর করে কয়েকটি অ্যাড্রেস বা ঠিকানার উপর। এগুলো হলো বাসার ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল অ্যাড্রেস এবং ওয়েবসাইট। হ্যাঁ, আজকের যুগে ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের প্রসার, ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা ব্যাপকতা লাভ করেছে। সারা বিশ্বের ন্যায় আমাদের বাংলাদেশেও ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনকে দিন। নিজেকে মেলে ধরতে কে না চায়। আর সেই সুযোগ করে দিয়েছে ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট। ব্যক্তি হিসেবে নিজের মেধা, জ্ঞান, গঠনমূলক চিন্তা, শিক্ষামূলক ব্লগ, অনলাইন ব্যবসা ইত্যাদিকে নিজস্ব গন্ডির মধ্যে না রেখে সারা বিশ্বের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই ওয়েবসাইট। একবার ভাবুন, আপনা মেধা ও জ্ঞানকে নিজের মধ্যে কুক্ষিগত করে রেখেছেন, ছড়িয়ে দেবার কোন সুযোগ ও প্লাটফর্ম পাচ্ছেন না। সেক্ষেত্রে একটি ওয়েবসাইট হতে পারে আপনার সে স্বাদ ও স্বপ্নকে পূরণ করবার মোক্ষম হাতিয়ার। অনেকেই হয় ভাবতে পারে খরচের বিষয়টা। না, তেমন কোন খরচই নেই বললেই চলে। হ্যাঁ, তবে যদি একটু নিজের মতো গুছিয়ে নিতে চান তবে সামান্য খরচে কি আসে যায়। নিজের একটা আলাদা জগতকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে সামান্য খরচ আর তেমন কি বিষয় ! অন্যদিকে, বিনা খরচেও আপনি চাইলে নিজের একটি ওয়েবসাইট পেতে পারেন। এখন এই মুহূর্তে আপনি যে লেখাটি এই ওয়েবসাইটে পড়ছেন সেটি তৈরিতে কোন খরচই লাগেনি। অবাক হচ্ছেন, হ্যাঁ, ব্লগার ডট কম নামে গুগলের এই সাইটটিতে যে কেউ চাইলেই একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারেন নিজের মতো করে।
https://clients.nhostbd.com/aff.php?aff=132


অন্যদিকে, ব্যক্তি, অফিস আদাল, ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের চাহিদার বাড়ছে দ্রুত গতিতে। আজকের দিনে একটি ওয়েবসাইট একটি দুনিয়া, একটি ঠিকানা। নিজেকে মেলে ধরার অবারিত সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় একটি ব্যক্তিগত ওয়বসাইট। আর তাই ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের চাহিদা এখন গগণচুম্বী। অন্যদিক, গুগলের ব্লগার ডট কম ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট কিংবা ব্লগ সাইট তৈরিতে যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। নিজের মনে কথাগুলোকে সময় নিয়ে কাউকে শেয়ার করতে না পারলেও এই ব্লগারে আপনি নিজেকে শেয়ার করতে পারবেন অনায়াশে। বিশ্বের কোথাও না কোথাও আপনার জন্য অবশ্য একজন হলেও পাঠক অপেক্ষা করছে। হ্যাঁ, গুগল সার্চ  ইঞ্জিন আপনাকে সেই সহায়তা দিবে। আর এভাবে আপনি যদি নিজের জ্ঞান, চিন্তা, সৃজনশীলতা ধারাবাহিকভাবে আপনার ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে থাকেন নিয়মিতভাবে তবে একটা সময় অবশ্যই হাজার হাজার পাঠক আপনার ওয়েবসাইটে আসবে। শুধু তাই নয়, হতে পারে আপনার লেখাতে অনেকে তাঁদের নিজেকে খুঁজে পাবে। ফলে ঐ পাঠক শ্রেণি আপনার কাছ থেকে নিয়মিত লিখা প্রকাশ করার আহবান করবে। 
আর পাঠকদের অনুরোধ বা মন রক্ষা করতে আপনাকে অবশ্য ব্লগ পোস্ট করতে হবে। আর এভাবে আপনার জনপ্রিয় হয়ে যাওয়াটা কোন কাল্পনিক কিছু নয়। যারা আজ জনপ্রিয়তার শীর্ষে তারা এ পথেই জনপ্রিয় হয়েছে। আর এই জনপ্রিয়তার হাত ধরেই আপনার কাছে এসে ধরা দিবে অর্থ। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটে বা ব্লগ সাইটে দেশি বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে চাইবে। আর এর বিনিময়ে আপনাকে তারা কমিশন দিবে। ফলে লেখতে লেখতেই আপনি নিজের অজান্তেই অর্থ ও জনপ্রিয়তা দুটোই অজর্ন করতে পারবেন। কিন্তু সম্পদ আপনার শুধুমাত্র ঐ একটা ওয়েবসাইট। যে কারণেই ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে চাহিদা আজ ব্যাপক।
তবে একটা বিষয় ভুলে গেলে চলবে না। সবাই কিন্তু লেখনির মাধ্যমে নিজেকে মেলে ধরা বা প্রকাশ করতে জানে না। বিশেষ করে কোন লেখা বা প্রবন্ধ বা আর্টিকেলের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করতে পারাটা একটা বিশাল গুণ। যা সবার মধ্যে থাকে না। বিশেষ করে শিক্ষামূলক জ্ঞান সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে বিশ্ববাসী সচেতন করা ও শিক্ষিত করা একটা রোমাঞ্চকর কাজও বটে। এমন একটি কাজে নিজেকে শরিক করতে পারাটাও কোন অংশে কম গৌরবের নয়।
যেভাবে একটি ওয়েবসাইট পাবেন-
  • Blogger.com, Godaddy.com, Bluehost.com, Hostgator.com ইত্যাদি স্বনামধন্য হোস্টিং কোম্পানি থেকে ডোমেন ও হোস্টিং ক্রয়ের মাধ্যমে নিজের একটি ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলতে পারেন অনায়াশে। তবে এগুলোর মধ্যে ব্লগার বা ব্লগস্পট প্লাটফর্মে আপনি বিনামূল্যে আপনার কাঙ্খিত ওয়েবসাইটটি বানাতে পারেন।
  • বাংলাদেশি অনেক হোস্টিং কোম্পানি যেমন- NHOSTBD, WEBHOSTBD, EICRA ইত্যাদি ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি থেকেও স্বল্পমূল্যে আপনার ডোমেন ও হোস্টিং ক্রয় করে একটি ওয়েবসাইট বানাতে পারেন।
  • আপনার যদি ওয়েবসাইট বানানোর অভিজ্ঞতা না থাকে তবে দেশি অনেক ওয়েবসাইট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদেরকে দিয়ে স্বল্প খরচে আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরি করতে পারেন। তবে ব্লগারে ওয়েবসাইট তৈরি খুব একটা কঠিন কিছু নয়। এটি একটি নির্ধারিত প্লাটফর্ম যেখানে ওয়েবসাইট তৈরির ছক করে দেওয়া আছে পূর্ব থেকেই। আপনি শুধু পোস্ট লিখবেন আর পোস্ট বাটনে ক্লিক করে আপনার কন্টেন্ট বা লেখা পোস্ট বা পাবলিশ করবেন সারা বিশ্বের মানুষের জন্য। একইভাবে, Wordpress এ ও আপনি আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। ব্লগারের মতো ওয়ার্ডপ্রেসও একটি প্রিডিফাইন প্লাটফর্ম যেখানে আপনি কোন প্রকার কোডিং ছাড়াই আপনার ওয়েবসাইট খুব সহজেই তৈরি করতে পারেন।
  • ব্লগার ডট কম ব্যতীত যে কোন ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং ক্রয় করলে সেই হোস্টিংয়ে আপনি সহজেই ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করতে পারবেন। এছাড়াও জুমলা, দ্রপল ইত্যাদিতেও আপনি আপনার ওয়েব সাইট তৈরি করতে পারবেন।
  • সর্বশেষ বিষয়টি হলো উপার্জন। আপনার ওয়েবসাইটে আপনি যখন সময় দিতে থাকবেন তখন এখানে ভিজিটর আসবে। আপনার ওয়েবসাইট জনপ্রিয় হলে বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন যেমন, গুগল অ্যাডসেন্স সেক্ষেত্রে খুবেই জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন দাতা প্রতিষ্ঠান আপনার সাইটে অ্যাড বা বিজ্ঞাপনের অনুমোদন দিলে আপনে টাকা পাবেন।
আজকের বিশ্বে প্রতিটি ওয়েবসাইট জ্ঞানের ভান্ডার হিসেবে কাজ করছে। কোন না কোন ভাবে একটি ওয়েবসাইট বিশ্বের অসংখ্য মানুষের অজানাকে জানার মুক্ত তথ্য ভান্ডার হিসেবে কাজ করছে। উপকৃত হচ্ছে মানব সভ্যতা। হতে পারে একটি ওয়েবসাইট আপনার জানার পূর্ণতা আনয়ন করতে নাও পারে। কিন্তু দু চারটে ওয়েবসাইট ঘাটাঘাটি কররে একজন মানুষের কোন অজানাকে পূর্ণাঙ্গ জানায় রূপ দিতে ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বা ব্লগারের তুলনা হয় না।
↪↬ অর্থ আয় 💲💲 
এবার আসুন অর্থ আয়ের বিষয়টি একটু জানার চেষ্টা করি। যদি রস-কষহীন ভাবে বলি তাহলে বলতে হয় যদি অর্থ আয়ের বিষয়টা আপনার মাথায় সব সময় ঘুরপাক খায়, তবে আপনি হতাশ হতে থাকবেন। কেননা, আপনি তখন আপনার ব্লগিংয়ের প্রতি মনোনিবেশ করতে পারবেন না। নিজের অজান্তেই নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন। আপনার পরিশ্রমগুলোকে আপনার কাছে অর্থহীন মনে হতে থাকবে। কারণ আপনি খুঁজছেন টাকা। আর সেই টাকা না আসা পর্যন্ত আপনার অস্থিরতা আপনাকে তাড়িয়ে বেড়াবে। কেবলই মনে হতে থাকবে আপনি অযথাই সময় নষ্ট করছেন কিংবা শুধু শুধু খেয়ালের বশে ছুটোছুটি করছেন।
সহজ করে বলতে গেলে, আমি আপনার মনস্তাত্ত্বিক দিকটাকে ইঙ্গিত করছি। অর্থাৎ যদি টাকা উপার্জনটা আপনার সামনে চলে আসে, সেক্ষেত্রে ব্লগিংটা পিছনে পড়ে যাবে। আর বিপত্তি ঘটে সেখানেই। আপনি ব্যবসা করবেন অথচ দোকেন কোন মাল বা পণ্য নেই। সেক্ষেত্রে আপনি বিক্রি করবেনটা কী কিংবা লাভই করবেনটা বা কী। পণ্য দোকানে না সাজিয়ে, পুঁজি না খাঁটিয়ে কখনো কোন ব্যবসায় লাভ করা যায় কি? উত্তর তো সহজ, না। তাহলে এবার ভাবুন আপনার ব্লগ সাইটের পণ্য হচ্ছে আপনার পোস্ট এবং সেই পোস্ট বিক্রি করেই আপনি অর্থ আয় করবেন। এখন যদি আপনার সাইটে পাঠক পড়ার মতো কিছু না পায় তাহলে তারা আপনার সাইটে আসবে কেন এবং আপনি যে অর্থ উপার্জন করতে চাচ্ছেন তাই-ই বা কামনা করা কতটুকু যৌক্তিক? সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিজ্ঞাপন কোম্পানিগুলো পোস্ট বা কনটেন্ট নেই এমন একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগে কেন তাঁদের বিজ্ঞাপন প্রচারে রাজি হবে? আপনি কি তা করতে রাজি হবেন বা হতেন? প্রশ্ন রইলো।
উপরের প্রশ্ন দুটি যদি আপনি বুঝতে পারেন এবং যদি উত্তর পেয়ে যান তাহলে ধরে নিতে হবে যে, অনলাইনে আয়ের প্রধান এবং প্রথম কৌশল কী সেটি আপনার বোঝা হয়ে গেছে। অন্য অর্থে, এই যে আমি এত কষ্ট করে লিখছি তা কিন্তু আমার দোকানের পণ্যের কাজই করছে। আর ঠিক এই কাজটি আপনাকেও করতে হবে। এবার আসুন আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলি। সেটি হলো, শুধু কি পোস্ট হলেই হবে? আপনি কি দোকান থেকে যে কোন মানের কিংবা নিম্ন মানের পণ্য কিনবেন? উত্তর হলো, না। তাহলে আপনি যে, পোস্ট করবেন কিংবা আপনার ব্লগের জন্য কনটেন্ট তৈরি করবেন সেগুলো কি যে কোন মানের হলেই চলবে? পাঠক যদি উপকৃত না হয় কিংবা তাঁর সমস্যার সমাধান খুঁজে না পায় কিংবা যদি আপনার পোস্ট পড়তে আগ্রহ না পায় তাহলে আপনি পোস্টগুলো বিক্রি করবেন কার কাছে। অর্থাৎ আপনার পোস্ট বা কনটেন্টগুলো হলো আপনার পন্য এবং সেগুলো যদি গুণে মানে উন্নত হয় তবেই একজন পাঠক আপনার লেখা বা পোস্ট পড়বে। আর তাতে করে আপনার সাইটের প্রচার পেতে থাকবে। আপনার অর্থ আয়ও বাড়তে থাকবে। যেমনটা ঘটে কোন দোকানির সাথে। দোকানি যত ভালো মানের পণ্য তাঁর দোকানে তুলবে মানুষ তত ক্রয় করবে এবং দোকানির ভালো লাভ হতে থাকবে এবং আয় বাড়বে। তাই অনলাইন বা ওয়েবসাইট থেকে আয় করার পূর্বশর্ত হলো গুণগত মানে সমৃদ্ধ কনটেন্ট পোস্ট করতে হবে। এবং সেগুলোই এক সময় আপনার সম্পদ হয়ে অর্থ আয় করতে থাকবে। ফলে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটটিকে উপার্জনক্ষম, আকর্ষণীয় এবং পাঠকদের মন মতো করা জন্য দোকানদার হিসেবে আপনাকে যা করতে হবে-
  • নিজের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবেঃ অর্থাৎ আপনার ভেতরে যে জ্ঞান ভান্ডার রয়েছে তাকে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে। নিজেকে যত বেশি সমৃদ্ধ করবেন তত বেশি আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। এবং আপনার পোস্টে পাঠক তার প্রতিফলন লক্ষ করবে এবং আপনার পোস্টের প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকবে। ফলে কোন কিছু লিখার বা শেয়ার করার আগে ঐ বিষয় সম্পর্কে নিজে আগে ভালো করে জানার চেষ্টা করুন।
  • সময় দিনঃ একবার ভাবুন তো আপনি অফিস না করে কি বেতন পাবেন? অথবা কোন কাজ না করে কি টাকা উপার্জন সম্ভব? মানে সময়ের বিনিময়ে অফিস আপনাকে বেতন দেয়। আর সময়ের বিনিময় হচ্ছে ঐ সময়টুকু আপনি অফিসের জন্য কাজ করে দেন। তাহলে অনলাইনে কাজ না করে কিংবা সময় না দিয়ে আপনি আয় করবেন তা কি হয়? গুগলের আর্টিকেল কিংবা ব্লগ পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন যে, গুগলের চাওয়াই হচ্ছে আপনি সময় দিন। অর্থ পাইয়ে দেওয়ার বিষয়টা গুগলের।
  • এসইও (SEO - Search Engine Optimization), সাইট র‌্যাংকিং, ব্যাকলিংক ইত্যাদি বিষয় প্রাথমিক অবস্থায় ভুলে যানঃ আর যদি এসব বিষয়ে না জানা থাকে তাহলে আরো ভালো। কেন বলছি এসব? কারণ, ব্লগারে নাম লেখানোর আগেই আমাদের ব্লগাররা তাদের ওয়েবসাইটকে কীভাবে র‌্যাংকিং করানো যাবে অথবা কীভাবে এসইও-র মাধ্যমে সার্চের টপে আনা যাবে সেসব বিষয়ে নিজেদের অস্থির করে তোলে। এবং শেষমেস হতাশ হয়ে যায় ও পথ হারিয়ে ফেলে। আমি বলছি, গুগলের স্পষ্ট কথা। আপনি কোয়ালিটি সময় দিন আপনার ব্লগে অর্থাৎ নিয়মিত সময় দিন তাহলে বাকিটুকু নিয়ে আপনাকে আর ভাবতে হবে না। গুগলের ওয়েবমাস্টার, রোবট এবং হাই টেকনোলজি সমৃদ্ধ অ্যানালিটিক ইঞ্জিন আপনার হয়ে কাজ করতে থাকবে। উদাহরণ দিয়ে বলি। আমারই লিখাতে যদি একটাও ‘বাংলাদেশ’ লিখা না থাকে তাহলে সার্চ করে আপনি কি তা পাবেন? না, পাবেন না। তাহলে এসইও করবেন কীসে? কিন্তু যদি ১০ বার ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি লিখা থাকে তাহলে কোন বাংলাদেশটি আগে নিয়ে আসা যাবে সার্চের মাধ্যমে সেটিই হলো এসইও, তাই তো? যদি তাই হয়, এবার আমি বলছি, একটি শ্রেণিতে সেই শিক্ষার্থীদেরকেই শিক্ষক মনে রাখে যারা বারবার তার সামনে আসে কিংবা যোগাযোগ রক্ষা করে। কিংবা শিক্ষকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়। তাদের ক্রমিক বা রোল নম্বর দিয়ে সহজেই শিক্ষক তাদের মনে রাখতে পারেন না। ঠিক এই বিষয়টির মতোই গুগলের সাথে বা গুগল ওয়েবমাস্টারের সাথে যে সকল ওয়েবসাইটের নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা হয় গুগল সে সব সাইটকেই সার্চে প্রাধান্য দেয়। এক্ষেত্রে এসইও করার দরকার নেই। যদি বিশেষ প্রয়োজন হয়, সেটি অনেক পরের কাজ। আগে আপনার এবং আমার কাজ হচ্ছে ওয়েবসাইটে প্রচুর সময় দেওয়া। মান সম্পন্ন পোস্ট নিয়মিত বিরতিতে লিখে প্রকাশ করতে থাকা। একটা সময় আসবে যখন আপনি নিজেই বুঝবেন যে আপনার এখন একটু অ্যাডভান্স লেভেলে কাজ করা উচিত। তখন আপনি এসব নিয়ে কাজ করা সুযোগ পাবেন বা কাজ করবেন। তার আগে সাইটটিকে প্রস্তুত করুন। মান সম্পন্ন পোস্ট করতে থাকুন নিয়মিত।
  • নিশ (Niche) বা টপিক নির্ধারণ করুনঃ এই বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী। এই বিষয়টির দুটি তাৎপর্যগত দিক রয়েছে। প্রথমত, ভিজিটররা বিশ্ব জুড়ে কোন বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি সার্চ করে। দ্বিতীয়ত, আপনি কোন বিষয়টি সম্পর্কে বেশি জ্ঞান রাখেন বা কোন বিষয়ে আপনার আগ্রহ বেশি। আর  এই দুটি কারণের সম্বনয় সাধন করে নিজের পছন্দের বিষয় নিয়ে ব্লগ সাইটে পোস্ট প্রকাশ শুরু করতে পারলেই সাফল্য অনিবার্য। কেননা, বিশ্বব্যাপী যে বিষয়গুলো সার্চ বেশি হচ্ছে আপনি যদি সে বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালো জ্ঞান লাভ করতে না পারেন কিংবা আপনার যদি সে বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা কম থাকে অথবা আপনি আগ্রহ না পান তবে কয়েকদিন পরেই আপনি ব্লগিং থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন। এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই ঘটনাটিই ঘটে থাকে। তাই বিশ্ব নয়, আপনি যে বিষয়টি অধিক ভালো বোঝেন ও জানেন সেই বিষয়টি নিয়ে লিখা শুরু করুন। আপনার ওয়েবসাইটটিকে ডেভলপ করতে থাকুন। হতে পারে, আপনার বিষয়টিতেও অসংখ্য মানুষের আগ্রহ আছে কিন্তু তাঁরা সে সম্পর্কে কোন আর্টিকেল বা ব্লগ খুঁজে পায়নি এতদিন। আপনিই তাঁদের জন্য ভালো কিছুর উৎস হয়ে দাঁড়ালেন। 
  • অন্যের সমস্যা সমাধানের উৎস হতে শিখুনঃ একটা বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এই যে আপনি আমি এবং আমরা প্রতিনিয়ত অনলাইনে কিছু না কিছু সার্চ করি কিংবা খোঁজার চেষ্টা করি। সেটা আসলে কি? সেটি হলো সমাধান। তাই এমন ভাবে পোস্ট করুন যেন পাঠক তাঁর সমস্যার সমাধান খুঁজে পায় আপনার পোস্টে। আপনাকে তাঁর সমস্যা সমাধানের আশ্রয়স্থল মনে করতে শুরু করে। আপনি হবেন তাঁদের উপকারি বন্ধু।
  • ভুল তথ্য না দেওয়া ও বিভ্রান্ত না করাঃ আপনার সাইটটি যদি পাঠকের আস্থা ধরে রাখতে পারে তবে তাঁরা কখনোই আপনাকে ছেড়ে যাবে না। এবং তাঁদের বিচরণে আপনার আয়ের পথ আরো সমৃদ্ধ হবে। কিন্তু যদি ভুল তথ্য কিংবা বিভ্রান্তিকর কিছু প্রকাশের মাধ্যমে তাঁদের আস্থার জায়গাটা নষ্ট করেন তাহলে পাঠকবৃন্দ আর আপনার সাইটে প্রবেশ করবেন না। আপনি আয় থেকে বঞ্চিত হবেন।
  • বড় বড় পোস্ট তুলনামূলকভাবে উপকারিঃ ছোট ছোট পোস্টগুলো গুগল র‌্যাংক করতে চায় না অনেক সময়। তাই পোস্ট করুন তুলনামূলকভাবে আকারে বড় হয় তেমন সব পোস্ট। নিজের জ্ঞানের সর্বস্ব ঢেলে দিয়ে পোস্টটিকে সুন্দর উপকারি আকর্ষণীয় ও স্বার্থক করে তোলবার চেষ্টা করবেন। সম্পূর্ণ তথ্য দিন যাতে করে পাঠক তাঁর সর্বোচ্চ উপকার আপনার পোস্ট থেকে পেয়ে যায়।
  • জালিয়াতি নয়, নয় কপি-পেস্টঃ কপিরাইট থেকে সব সময় দূরে থাকবেন। কখনো গুগলের সাথে চালাকি কিংবা প্রতারণা করতে যাবেন না। মনে রাখবেন আপনি মানুষ। আর গুগলে ব্যবহার করা হয়ে থাকে পৃথিবীর সেরা টেকনোলজি। কখন কোথায় কী করেছেন তা আপনি ভুলে যেতে পারেন, কিন্তু গুগল সেটি করবে না। ঠিকই আপনার কপি-পেস্টকৃত বিষয়গুলো আজ হোক কাল হোক ধরে ফেলবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আপনি। এতে করে আপনি গুগলের চোখে শত্রু হয়ে যাবেন। প্রয়োজনে সময় নিবেন। কিন্তু গুগলের পলিসি ভায়োলেট কিংবা লঙ্ঘন করা যাবে না কোনক্রমেই।
  • পরিচ্ছন্ন ও প্রোফেশনাল থিম বা টেমপ্লেট ব্যবহারঃ আপনার ওয়েবসাইটির বাহ্যিক দর্শন আকর্ষণীয় হওয়া বাঞ্ছনীয়। অনেকের সাইট ভিজিটর আকৃষ্ট করতে পারে না কেবল মাত্র এই একটি কারণে। কথায় আছে,“ আগে দর্শনধারী পরে গুণ বিচারী।” একজন পাঠক যদি আপনার সাইটে প্রবেশ করে একটি জটিলতা অনুভূব করে তার বিষয়গুলোকে খুঁজে পেতে তাহলে সে তাঁর আগ্রহ হারাবে। অন্যদিকে, গুগল অ্যাডসেন্স পাওয়ার জন্যও একটি পরিচ্ছন্ন ও প্রোফেশনাল থিম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই ওয়েবসাইটটির আকর্ষণ বাড়াতে অবশ্যই ভালো মানের একটি থিম ব্যবহার করুন। যেটি আপনার ভিজিটর, অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভ এবং অর্থ উপার্জনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
উপরের বিষয়গুলো বুঝে যদি আপনি নিয়মিত সময় দিতে থাকে। ছয় মাস থেকে এক বছর পর আপনি অবশ্যই ফলাফল পাবেন। নিজের উপর আস্থা রেখে এগিয়ে যান। সফলতা আসতে বাধ্য।

0 comments:

__আপনার মতামত নিচে লিখুন। ধন্যবাদ।__